পোকা তো নয় যেন খাঁটি সোনা

লেখক - পঞ্চানন মণ্ডল

হালিশহরে সায়ক দার নাম জানে না এমন ছাত্রছাত্রী খুব কম আছে।তাই বলে সায়কদা কোনো স্কুলের টিচার বা কলেজের প্রফেসর নন।একজন টিউশন মাস্টার।ছাত্রছাত্রীদের বায়োলজি পড়ায়। সিলেবাসের বাইরে বহু অজানা তথ্য ছাত্রছাত্রীদের বলে। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তার দারুণ সখ্যতা। সবার সঙ্গে বন্ধুর মতো মেশে। তাই তো ছাত্রছাত্রীরা অকপটে তাদের মনে যা প্রশ্ন আসে সায়কদাকে করে।সায়ক চেষ্টা করে যতটা সম্ভব বিজ্ঞানভিত্তিক উত্তর দেওয়ার।

গতকাল টিউশন ক্লাসে নন্দিতা সরাসরি সায়ককে জিজ্ঞেস করল-

 "আচ্ছা দাদা, সোনার চেয়েও দামী কোনো পোকা হতে পারে? "

এই প্রশ্ন শুনে ক্লাসের সবাই হো হো করে হেসে উঠল। দিশা তো সঙ্গে সঙ্গে বলেই ফেলল-

 "তুই কি এবার সোনার চেন গলা থেকে খুলে পোকার চেন পড়বি নাকি রে নন্দিতা? "

সায়ক দা সবাইকে থামিয়ে বলল-

 "চুপ কর সবাই। কেউ কোনো প্রশ্ন করলে তোদের তাকে হেয় করার স্বভাব এখনো গেল না। তোরা এমন করলে কেউ তো আর কোনোদিন কোনো প্রশ্নই করবে না।বিজ্ঞানকে প্রশ্ন বিদ্ধ না করলে সেটা কিসের বিজ্ঞান! বিজ্ঞান তো তাহলে অন্ধবিশ্বাস হয়ে যাবে। প্রশ্নই হলো বিজ্ঞানের চালিকাশক্তি। নন্দিতা কোথাও এটা পড়েছে বা শুনেছে তাই এটা নিয়ে প্রশ্ন করেছে। এতে এতো হাসি মস্করার কি আছে!!

নন্দিতা - আমি তাহলে ঠিক বলেছি, তাইতো সায়ক দা?

সায়কদা - হাঁ। আমরা আমাদের গ্রাম বাংলায় যাকে কাঁচপোকা বলি তার একটি জাত হলো সেই পোকা। আমাদের দেশে লাউ কিংবা কুমড়ো গাছে থাকা জোনাকি পোকার মতো গুবরে পোকার বংশজাত এক ধরণের পোকা।বলা চলে একধরনের বিটল।সন্ধিপদ পর্বের এই পোকার ক্যারাপেস নামের খোলকের অফুরন্ত রূপ-বৈচিত্র্যের জন্য গ্রাম-বাংলায় এদের আমরা কাঁচ পোকা বলি।

এদের বর্ম পোকাও বলা হয়। ফিনফিনে ডিম্বাকৃতির ছোট দেহটা একজোড়া কঠিন ডানা বা বর্মের আড়ালে সবসময় ঢাকা থাকে। এই বর্ম তাকে রক্ষা করে।

সাগর - দাদা এগুলো কি শুধু আমাদের গ্রামবাংলায় পাওয়া যায়?

সায়কদা - এদের নানারকম প্রজাতি হয়। অ্যান্টার্কটিকার বরফ আর সাগর-মহাসাগর বাদে দুনিয়ার প্রায় সবজায়গার বিটল জাতীয় পোকার দেখা মেলে ।পৃথিবীজুড়ে এই পোকার প্রায় ৩ লক্ষ ৫০ হাজার প্রজাতি আছে! তোরা শুনলে অবাক হবি এদের কিছু প্রজাতির এই রূপের ছটা দেখে বিজ্ঞানী চার্লস ডারউইনের মতো ব্যক্তিত্বও চমকে উঠেছিলেন বলে শোনা যায়।

দিশা - তা নয় বুঝলাম এর আছে রংবাহারি  রূপ! কিন্তু সত্যি কি এটা সোনার থেকেও দামী পোকা?

সায়ক দা -হাঁ।সেটা সোনালি রঙের মহামূল্যবান এক গুবরে পোকা। জুয়েল স্ক্যারাব (jewel scarabs)। এই পোকা সাধারণত  লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি, সবুজ ইত্যাদি রঙের হয় ।বেশিরভাগ ক্রাইসিনা গণের প্রজাতি। এর মধ্যে সোনালি রঙের খুব দামী পোকাও দেখা যায়।যার বৈজ্ঞানিক নাম ‘ক্রাইসিনা রিসপ্লেন্ডেনস’ Chrysina resplendens। এদের মূলত বেশি দেখা যায় হন্ডুরাসের পার্বত্যাঞ্চলে। হন্ডুরাসে পোকাটা জুয়েল স্ক্যাবার নামে পরিচিত । যখন এরা জঙ্গলের উপর দিয়ে  ঝাঁক বেঁধে উড়ে যায়, তখন এদেরকে দেখে মনে হয় কে যেন একরাশ সোনালি রঙের মোড়ক কাগজ আকাশে উড়িয়ে দিয়েছে ।

বাদল - সত্যি কি এই পোকা সোনা দিয়ে তৈরি? যদি তাই হয় তাহলে পোকায় কতটা সোনা থাকে ?

সায়কদা - না না, এতে ধাতব সোনা থাকে না।তবে তোদের  অবাক লাগলেও এটা সত্যি যে,এই পোকার সংগ্রাহকরা সোনার চেয়েও বেশি অর্থ মূল্য দিয়ে জুয়েল স্ক্যারাব কেনে! সোনালি রঙের এক ভরি জুয়েল স্কারাবের বর্ম বা পাখার দাম ২০০ ডলার মানে ষোলো হাজার টাকার মতো। 

নন্দিতা -বাপরে!! এতো দাম!! তা এই পোকার এতো দামের কারণ কি?তুমি যে বললে কোনো সোনা থাকে না!!

সায়কদা -এদের ডানা ও মাথায় যে প্রকৃতি প্রদত্ত রঙের আস্তরণ রয়েছে তা সত্যিই পৃথিবীতে দুর্লভ। নিখাদ সোনার রঙ। দেখতে আসল খাঁটি সোনার মতো। চমৎকার চোখ ঝলসানো সৌন্দর্য ।প্রকৃতি হাজারো পশুপাখি কীটপতঙ্গ গাছপালার হাজারো রঙ আছে, তার থেকে এ রঙ যেন ইউনিক। এই রঙ মানুষকে অবাক করে, মুগ্ধ করে, বিহ্বল করে। আগেই বলেছি এই রঙের ছটায় মুগ্ধ হয়েছিলেন স্বয়ং ডারউইন সাহেব!! গবেষকদের মতে ,এই সোনালি স্ক্যারাবের রঙ পুরোপুরি আসল আর অদ্বিতীয় প্রাকৃতিক রঙের বিচ্ছুরণ।যাকে অনেকে বলে ব্রিলিয়ান্ট গোল্ডেন কালার! উজ্জ্বল সোনালি রঙ ।তবে এই রঙের নেপথ্যে সোনা না থাকলেও এই রঙ ধাতুযুক্ত। এজন্য একে ধাতব গুবরে পোকাও বলা হয়। এদের গায়ে আলো পড়লে আলো বিচ্ছুরিত হয়। অদ্ভুত আলোর ছটা চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।

বাদল - তাহলে এতো সোনার থেকেও সুন্দর! এর গায়ে তো হীরের ছটা। তা এতো দামী পোকা কারা কেনে সায়কদা? 

সায়কদা - আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাক্সিটার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকগণ জানিয়েছেন জুয়েল স্ক্যারাবদের দেখলে মনে হয় এগুলো নিখাদ সোনা দিয়ে তৈরি। চকচকে উজ্জ্বল থেকেও উজ্জ্বলতর সোনার রঙের জুয়েল স্ক্যারাব সংগ্রাহকদের নিকট ব্যাপক মূল্যবান।তোদের শুনলে অবাক লাগবে এগুলো কিন্তু  বেশির ভাগই কিনে নেয় বিশ্বের নামীদামি  বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রগুলো।

দিশা -তাই নাকি! কেন?গবেষকরা এগুলো নিয়ে কি করবে?

সায়কদা -  এসব রঙিন স্ক্যারাবদের গবেষণাগারে ব্যবহার করা হয়, তাছাড়া  ডিসপ্লে হিসেবেও রাখা হয়।এখন মহাকাশ গবেষণায়ও কাজে লাগানো হচ্ছে বিস্ময়কর এই পোকা।

নন্দিতা - মহাকাশ গবেষণায় গুবরে পোকা? 

সায়কদা - হাঁ রে! কোস্টারিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানী ড. ইভান ফিনলেজনের বলেছেন -‘জুয়েল স্ক্যারাবদের মূল্য শুধু পোকার শক্ত খোলকের পাখার সোনালি রঙের জন্য নয়। এই পোকার ধাতব খোলকের আলো প্রতিফলনের ক্ষমতা আধুনিক ন্যানো প্রযুক্তির এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত। আলো প্রতিফলনের ক্ষমতা পর্যবেক্ষণে জুয়েল স্ক্যারাব আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনেও পাঠানো হবে।কৃত্রিম উপগ্রহ ও অন্যান্য মহাকাশ যানের রূপান্তরিত হালকা যন্ত্রাংশ হিসেবে এটা বিবেচনা করা যায় কিনা তা মূল্যায়নের জন্য গবেষণা হবে। বর্তমানে  জুয়েল স্ক্যারাবের প্রাকৃতিক উজ্জ্বল রঙের উজ্জ্বলতা মহাশূন্যে কতটা সহনশীল তা জানতে সফল গবেষণা এবং পরীক্ষাও সম্পন্ন হয়েছে। এর আগে আবহাওয়া বেলুনে করে ৮,৩০০ মিটার উঁচুতে এই পোকা পরিবহন করে প্রথম সফল হন বিজ্ঞানীরা। এরপর বিজ্ঞানীরা ছোট শক্তিশালী রকেটে করে মহাকাশে পাঠিয়ে মাসের পর মাস ক্ষুদ্র এই পোকার মৌলিক আচরণ পর্যবেক্ষণ করে সফল হয়েছেন।আরো গবেষণা চলছে। 

নন্দিতা -  মহাকাশ গবেষণার জন্য এতো দাম! সত্যি সত্যি কি এগুলো আমরা জুয়েলারি হিসাবে ব্যবহার করতে পারব না? 

দিশা - তোর গহনা পরার শখ জানি! তাই বলে তোর পোকার গহনা পরতে হবে?

সায়কদা - শুধু যে এই পোকা নিয়ে গবেষণা হচ্ছে এমনটা নয়।নন্দিতাদের জন্য গহনার ও ব্যবস্থা হচ্ছে।পোকার দেহের উপরের কাঠামো বা মসৃণ পাখনা দিয়ে তৈরি হচ্ছে দামি জুয়েলারি অলঙ্কার, কানের দুল, আংটি, শার্টের বোতাম, কোটপিন, টাইপিন, গলার রিং সহ নানা সৌখিন জিনিস।গবেষকরা জানিয়েছেন, পোকার দেহের সোনালি খোলক নাকি পিরামিডের মমির ব্যান্ডেজের কাজে ব্যবহার করা হতো!এখনো এই জুয়েল স্ক্যারাব প্রাচীন মিশরীয় সংস্কৃতিতে ধর্মের পবিত্র অনুষ্ঠানে প্রার্থনার অনুষঙ্গ হিসেবে দরকার হয়। এছাড়াও এই পোকার অন্য এক প্রজাতি হলো ক্রাইসোকরিস স্টলি, Chrysocoris stollii, এদের শক্ত খোলকের পিঠ সবুজ, উজ্জ্বল রক্ত লাল, বাদামিসহ বিভিন্ন উজ্জ্বল রঙের হয়ে থাকে। এগুলো পেট থেকে সম্পূর্ণ দেহ পাখা দিয়ে দু’ভাগ করে আবৃত থাকে।এসব পোকার ফসিল বা পাখনা দিয়েও তৈরি হয় তুলনামূলক কমদামী নেকলেস, চাবির রিং, কুটির শিল্পকর্ম, বা চিত্রকর্ম, ওয়াল পেইন্টিং, বিজ্ঞান প্রজেক্ট, ব্যক্তিগত সংগ্রহ এবং নানাবিধ সৃজনশীল সাজসজ্জা। বাজারে এগুলোর দাম তুলনামূলক সস্তা। প্রতি ভরির মূল্য ৫০ ডলার বা ৪ হাজার টাকার মতো।

সাগর - সায়কদা, এই পোকার  রঙ এতো উজ্জ্বল কেন ঠিক বুঝতে পারলাম না ?

সায়ক দা - আধুনিক গবেষণা বলছে, জুয়েল স্ক্যারাবদের কঙ্কাল কাঠামো পুরোটাই প্রাকৃতিক ন্যানো কাঠামোর। এই ন্যানো কাঠামোই বৃত্তাকারে আলো প্রতিফলনে ম্যাজিকের মতো কাজ করে থাকে। এই রঙে প্রাকৃতিক উপাদান কাইটিন এবং বিভিন্ন ধরনেরর প্রোটিনের মিশ্রণ আছে।যেমন রেশম তন্তুতেও উজ্জ্বল রঙের সেরিসিন প্রোটিন আছে,  যা অতি উজ্জ্বলতা ছড়ায়।জুয়েল স্ক্যারাব বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের সেন্সরি ইউনিভার্সিটি অব অ্যাক্সাটার এর প্রফেসর পিটি ভুকসিক অ্যাস এখন বিভিন্ন ধরনের জুয়েল স্ক্যারাব নিয়ে গবেষণা করছেন।তাঁর মতে, এই পোকার সোনালি রঙের উজ্জ্বলতার এদের  এদের দেহের শক্ত খোলক বা বহিঃকঙ্কাল। যা পোলারাইজ প্রতিফলন সৃষ্টি করে। পোলারাইজড ৩ ডি চশমার মতো আলো প্রতিফলিত করে। এদের গায়ের রঙের দিকে তাকালে মানুষ বা অন্য প্রাণীর  চোখের অপটিক্যাল সেন্সর প্রযুক্তি মার খায় । এটা পোলারাইজেশন একটা প্রাকৃতিক কলকাঠি। সারাবিশ্বে সংখ্যায় অনেক সবুজ স্ক্যারাব পাওয়া গেলেও তাদের সকলের থেকে পোলারাইজড আলো বিচ্ছুরিত হয় না। 

দিশা - আচ্ছা সায়ক দা, এরা নিশ্চয়ই নন্দিতার গহনার শখ মেটানোর জন্য ডানায় এতো ঔজ্জ্বল্য সৃষ্টি করে নি!এই ঔজ্জ্বল্যের নিশ্চয়ই এর কোনো নির্দিষ্ট কারণ আছে? তাই তো?

সায়ক দা- একদম তাই।অভিযোজন আর বিবর্তন। উজ্জ্বল সোনালি রঙের আলোর প্রতিফলন ঘটিয়ে এই পোকারা আত্মরক্ষা করে। অনুসরণকারী শত্রু প্রাণীর চোখ ঝলসে দিয়ে আত্মরক্ষায় জন্য ক্যামোফ্লেজ করে। এও বলে রাখি , অন্য ক্ষুদ্র পতঙ্গ লাল, সবুজ, হলুদ রঙ আলাদা করতে পারলেও সোনালি রঙ আলাদা করতে পারে না। তাই এরা ঘাপটি মেরে কোথাও পড়ে থাকলেও সহজে দেখা যায় না।এও এক অভিযোজন। 

নন্দিতা - এতো হাজার রকমের বিটলের মধ্যে কোনটা সেই দামী পোকা চিনব কী করে?

সায়কদা - জুয়েল স্ক্যারাব বিশেষ করবে সোনালি স্ক্যারাব আকৃতিতে অন্য বিটলদের থেকে বৈচিত্র্যপূর্ণ। এদের  পিঠের ঢাল বা খোলসের জোড়া গুলো খালি চোখে প্রায় দেখাই যায় নাএটা বড়ই নিরীহ।হাত দিলে কামড়ায় না। তবুও এদের ধরা মোটেও সহজ কাজ নয়। শিকারী বা শত্রুর কোনো টের পেলে বা  বিপদ দেখলেই এরা খুবই সতর্ক।উল্টোপাল্টা বেগতিক কিছু টের পেলে  খুব দ্রুত গা ঢাকা দিতে এদের জুড়ি মেলা ভার।নিমেষেই উধাও। কেবলমাত্র বিশেষজ্ঞ  সংগ্রহকারীরা পূর্ণ বয়স্ক পোকা ধরতে পারেন। তবে পানামা কোস্টারিকা এল সালভেদর আর মধ্য যুক্তরাষ্ট্রের গহীন জঙ্গলের অভয়ারণ্যে এদের ডেরা খুঁজে পাওয়া চাট্টিখানি কথা নয়। এরা কলোনি করে বাস করে। এদের জীবন চক্রে সম্পূর্ণ রূপান্তর দেখা যায়। ডিম, লার্ভা, পিউপা এবং পূর্ণাঙ্গ । লাখ লাখ স্ক্যারাবের ডিম, লার্ভা, শুককিট জঙ্গলের গোপন স্থানে লুকিয়ে আছে। সাধারণত উঁচু জঙ্গলে গাছের আগায়  স্ত্রী স্ক্যারাবরা প্রচুর  ডিম পাড়ে।  ডিম থেকে লার্ভা বের হয়।লার্ভাগুলো গাছে থাকে। লার্ভারা গাছের গুঁড়ি থেকে তাদের খাবার হিসেবে সেলুলোজ সংগ্রহ করে এবং মিথোজীবী প্রক্রিয়ায় খাদ্য হজম করে। লার্ভার পা থাকে না। লার্ভারা দিনের বেলায় সক্রিয় থাকে।  বিকেলে বা সন্ধ্যের দিকে বাইরে বেরিয়ে আসে।আবার রাতে গর্তে, শিকড়-বাকড়, কাণ্ড ও পাতার অন্তরালে চলে যায়। কিছুদিন পরে এরা পিউপাতে পরিণত হয়, গুঁটি বাঁধে। যখন বর্ষা নামে তখন পূর্ণাঙ্গ স্ক্যারাবরা গুঁটি কেটে বেরিয়ে আসে। প্রথমে এদের শরীর নরম ও মলিন থাকে। কিন্তু কয়েক ঘণ্টা বাদে এদের শরীর শক্তপোক্ত হয়ে উঠলে তখন এদের দিকে তাকালে চোখ ফেরানো দায়। নামে জুয়েল, রূপেও জুয়েল।

দিশা - তাহলে কি এই রূপই এদের মৃত্যুর কারণ হচ্ছে সায়কদা? 

সায়কদা - একদম তাই রে!এদের এই ভূবনমোহন রূপের জন্য শিকারীরা এদের শিকার করছে।যেমন সব সুন্দর বন্য জীবজন্তুদের মানুষ নিজের প্রয়োজনে শিকার করে।এভাবেই বহু জীবজন্তুর অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। জীববৈচিত্র্য হ্রাস পাচ্ছে।এই জুয়েল স্ক্যারাবদের খুঁজে খুঁজে ধরে বাজারে যেভাবে চড়া দামে বিক্রি করা হচ্ছে তা এদের বিপদ ডেকে আনছে।পোকা শিকারীদের কারণে অদূর ভবিষ্যতে হয়তো পৃথিবীর আর কোথাও দেখা যাবে না স্বর্ণোজ্জ্বল জুয়েল স্ক্যারাব। হয়তো পৃথিবী থেকে সম্পূর্ণ  বিলুপ্ত হয়ে যাবে সোনার চেয়েও দামী এই পোকা। 

সূচিপত্র

কল্পবিজ্ঞান

গল্পবিজ্ঞান

বিজ্ঞান নিবন্ধ

পোড়োদের পাতা


Copyright © 2011. www.scientiphilia.com emPowered by dweb