হাসির কথা

লেখক - সৌম্যকান্তি জানা

 

                                                

“হাসছি মোরা হাসছি দেখ, হাসছি মোরা আহ্লাদী,

তিন জনেতে জটলা ক’রে ফোক্‌লা হাসির পাল্লা দি।

হাসতে হাসতে আসছে দাদা, আসছি আমি, আসছে ভাই।

হাসছি কেন কেউ জানে না, পাচ্ছে হাসি হাসছি তাই।

ভাবছি মনে, হাসছি কেন? থাকব হাসি ত্যাগ করে,

ভাবতে গিয়ে ফিকফিকিয়ে ফেলছি হেসে ফ্যাক ক’রে।” (“আহ্লাদী” – সুকুমার রায়)

হাসির গোড়াপত্তনঃ

হাসি নেই পৃথিবীর কোনও মানুষের মুখে – এমন দৃশ্য কি স্বপ্নেও দেখা যায়? হাসি মানুষের এমন এক বৈশিষ্ট্য যা শিখতে হয় না, জন্ম থেকেই অর্জিত। জন্মের পর শব্দ তৈরি করতে পারার আগেই শিশুর মুখে কিন্তু হাসি দেখা যায়। আবালবৃদ্ধবনিতা সবার মনে খুশি ও আনন্দের বহিঃপ্রকাশ হয় হাসি দিয়ে। আর হাসি এমনই এক বৈশিষ্ট্য যা একজন সামনাসামনি অন্যদেরও হাসতে প্রভাবিত করে। ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে – “Laugh and the world will laugh with you, cry and you will cry alone.” অর্থাৎ তুমি হাসলে সারা পৃথিবী তোমার সাথে হাসবে, আর কাঁদলে তুমি একাই কাঁদবে। তাই তো বাবা-মা উদয়াস্ত পরিশ্রম করে সন্তান ও পরিবারের অন্যদের মুখে হাসি ফোটাতে।

হাসি তো শুধু খুশির বাহ্যিক প্রকাশ নয়, হাসি হল মানসিক চাপ মুক্তির একটা কার্যকরী মাধ্যম। মানসিক চাপ থেকে আমাদের শরীরে হাজার রোগ বাসা বাঁধে। এক দমকা হাসি নিমেষে সেই মানসিক চাপকে মন থেকে ছুঁড়ে ফেলে দেয়। আবার উচ্চৈঃস্বরে হাসি শরীরের নানা অঙ্গের কার্যকারিতাও বাড়িয়ে দেয়। হাসি যে শুধু শরীর ও মনকে সুস্থ রাখে তাই-ই নয়, হাসির মধ্যে দিয়ে বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-পরিজন, পাড়া-প্রতিবেশী ও সহকর্মীদের সাথে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে ওঠে, মানসিক ও সামাজিক মেলবন্ধন সুদৃঢ় হয়। আর তাই নোবেলজয়ী সাহিত্যিক তথা দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের এই কথাগুলি খুবই প্রণিধানযোগ্য – “Laughter is the most inexpensive and most effective wonder drug. Laughter is a universal medicine.”, অর্থাৎ হাসি হল সবচেয়ে অমূল্য ও সবচেয়ে কার্যকরী বিস্ময়কর ঔষধ, হাসি হল সর্বজনীন ঔষধ।

 হাসির বিবর্তনঃ

হাসির সৃষ্টি কবে? কথাটা পড়ে হাসছেন? ব্যাপারটা কিন্তু মোটেই হাসির নয়। মানুষের মুখে ভাষা সৃষ্টি হওয়ার অনেক আগে থেকেই হাসির উৎপত্তি হয়েছে মানুষের মুখে। সময়টা ৫০ লক্ষ থেকে ৭০ লক্ষ বছর আগে তো হবেই। বৃক্ষবাসী আদিম মানুষ বৃক্ষ থেকে নেমে এসে প্রথমে চতুষ্পদ জন্তুদের মতোই মাটির উপরে হাঁটত। তখন সেই আদি মানবের মুখে সম্ভবতঃ হাসির কোনও বহিঃপ্রকাশ ছিল না। কিন্তু যখন থেকে সে বৃক্ষ ছেড়ে মাটির উপরেই তার জীবনযাত্রা অতিবাহিত করতে শুরু করল তখন থেকেই সে চতুষ্পদ জীব থেকে ধীরে ধীরে দ্বিপদ জীবে পরিবর্তিত হল। আর তার মুখেও দেখা গেল হাসির ঝিলিক। এই বক্তব্যের পেছনে বিজ্ঞানীদের কিন্তু প্রামাণ্য যুক্তি রয়েছে। শিম্পাঞ্জিরা মানুষের অনেকটা নিকটাত্মীয় হলেও মানুষের মতো হাহা-হিহি-হোহো করে হাসতে পারে না। কারণ ওরা চতুষ্পদ। চার পায়ে যখন ওরা হাঁটে তখন শব্দ সৃষ্টির ক্ষমতা অনেকটাই বাধাপ্রাপ্ত হয়।

অবশ্য হাসি মানেই হাহা-হিহি-হোহো নয়। শব্দহীন মুচকি হাসির গুরুত্বও কম নয়। এমন হাসি দিয়ে যে কত প্রেমিক-প্রেমিকার প্রথম মন দেয়া-নেয়া হয়েছে তার ইয়ত্তা নেই। এমন হাসি দিয়ে যেমন সৌজন্য বিনিময় করা যায় তেমন কাউকে সহানুভূতিও জানানো যায়। মোদ্দা কথা, মুচকি হাসি হল সামাজিক সংযোগ গড়ে তোলার উত্তম মাধ্যম।

বিবর্তনবিদ চার্লস ডারউইন তাঁর “The Expression of Emotions in Man and Animals” বইতে উল্লেখ করেছেন যে আনন্দের সামাজিক বহিঃপ্রকাশের জন্যই হাসির উৎপত্তি এবং হাসি কোনও জনগোষ্ঠীকে জীবনযুদ্ধে বেঁচে থাকতে অতিরিক্ত সুবিধা দেয়। এভাবেই হাসি নামক বৈশিষ্ট্যটি ‘ভালো থাকা’-র অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীর মধ্যে স্থায়ী আসন লাভ করেছে। সমীক্ষায় দেখা গেছে, কোনও মানুষ যদি অনেকের মধ্যে সামাজিকভাবে অবস্থান করে তবে একা থাকতে পছন্দ করা কোনও মানুষের তুলনায় তার হাসার সম্ভাবনা ৩০ গুণ বেশি।

হাসা আর হাসানোঃ  

সব দেশে, সব সমাজেই রসিক মানুষের কদর রয়েছে অন্যদের থেকে একটু বেশি। চলচ্চিত্রে ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, জহর রায়, রবি ঘোষ, সন্তোষ দত্ত, চিন্ময় রায়, অনুপ কুমার, জগদীপ, আশরানি, কেষ্ট মুখার্জি প্রমুখের কদর নায়ক-নায়িকাদের থেকে কোনও অংশে কম ছিল না। জটায়ুকে ছাড়া ফেলুদার কথা কি ভাবা যায়? কমেডিয়ানরা হাসির উপাদান তৈরি করেন তাঁদের কথা, মুখের অভিব্যক্তি বা অভিনয় দিয়ে। তবেই আমরা সিনেমা বা টক শো দেখে হাসি। আমাদের আশেপাশেও এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা হাসানোর উপাদান জোগান দিতে পারেন। এঁরা হাসানোর জন্য এমন কোনও উপাদান হঠাৎ ছেড়ে দেন যা তাঁদের সামনে থাকা লোকজন আশা করতে পারেন না। এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রেরক ও গ্রাহকের মধ্যে হাসির উপাদানের কার্যকরী সমন্বয় হওয়া চাই। যেমন কোনও হাসির টক শোতে একই জোকস শুনে সমস্ত শ্রোতা সমান প্রতিক্রিয়া দেখান না। পরিবেশের উষ্ণতা একই হলেও সেখানে থাকা সব মানুষের ঠান্ডা বা গরমের অনভূতি যেমন সমান হয় না হাসির উদ্দীপনার ক্ষেত্রেও কথাটা সমানভাবে প্রযোজ্য। হাস্যরসের উদ্দীপনা সবার মস্তিষ্কে সমান প্রতিক্রিয়া তৈরি করে না। অর্থাৎ বোধগম্যতার মাপকাঠিতেই নির্ণীত হয় কে কতটা হাসবে। মজাটা বোধগম্য না হলে হাসি আসে না।

চোখ আর কানের মাধ্যমে গৃহীত হাস্যরসের উদ্দীপনা স্নায়ুর দ্বারা বাহিত হয়ে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট অংশে পৌঁছোলে কয়েকটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হাসির উদ্রেক হয়।  তবে সেই হাসি যেমন মুচকি হতে পারে, তেমন ফিকফিক বা খিলখিল হতে পারে। রসিকতা বুঝে সেইমতো প্রতিক্রিয়া দেওয়ার ব্যাপারটা মস্তিষ্কের একাধিক অংশ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। বিজ্ঞানীদের ধারণা, হাস্যরস উপলব্ধ হয় মস্তিষ্কের বামদিকের টেম্পোরাল খন্ড ও অক্সিপিটাল খন্ডের সংযোগস্থলে। তারপর এই উপলব্ধি আর প্রতিক্রিয়ার মধ্যে সমন্বয়সাধন করে মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল কর্টেক্স অংশ।

আমরা অনেক সময় দেখি অনেক মানসিক রোগী হাসির কোনও উদ্দীপনা ছাড়াই হাসছে। এ ছাড়াও মস্তিষ্কের কয়েকটি রোগে (যেমন সিউডোবালবার পলসি ও জিলাস্টিক এপিলেপ্সি) কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত হাসির উদ্রেক হয়। এই ধরণের হাসিকে চিকিৎসা পরিভাষায় বলা হয় ‘Pathological laughter’। মস্তিষ্কের বিশেষ কিছু অঞ্চলে ক্ষত তৈরি হলে রোগীর ‘Pathological laughter’ দেখা যায়।

রমণীর হাসিঃ  

রমণীকুল যে পুরুষকুলের তুলনায় বেশি হাসে এ নিয়ে নিশ্চয়ই কারও দ্বিমত নেই। শ্রেণিকক্ষে হোক কিংবা কোনও সভায় হাসির উদ্দীপনা পেলে পুরুষদের তুলনায় নারীরা অনেকগুণ বেশি হাসে। আবার নারীদের সেই হাসির শব্দের জোরও অনেকটা বেশি হয় পুরুষদের তুলনায়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে নারীকুলের হাসির শব্দের গড় কম্পাঙ্ক যেখানে ৫০২ হার্জ সেখানে পুরুষকুলের ক্ষেত্রে মাত্র ২৭৬ হার্জ। তবে এ-ও দেখা গেছে যে হাসির খোরাক জোগান দেয় বেশি পুরুষরাই।

হাসি খুব ছোঁয়াচেও। বিশেষতঃ মেয়েদের ক্ষেত্রে। বিজ্ঞানীরা দেখেছেন হাসির উদ্দীপনায় মহিলাদের মস্তিষ্কের বামদিকের প্রাক্‌-ফ্রন্টাল কর্টেক্স অংশ পুরুষদের তুলনায় বেশি সক্রিয় হয়। ওই অংশ সক্রিয় হলে মস্তিষ্কের প্রাক্‌-মোটর কর্টিক্যাল অঞ্চল থেকে মুখমন্ডলের পেশিগুলিতে বিশেষ সংকোচনের নির্দেশ যায়। আর তখনই মুখে হাসির অভিব্যক্তি ফুটে ওঠে। বিজ্ঞানীরা একদল স্বেচ্ছাসেবককে নানারকম শব্দ শুনিয়ে তাদের মস্তিষ্কে MRI করে দেখেছেন হাসি উদ্রেককারী শব্দগুলি তাদের মস্তিষ্কের প্রাক্‌-ফ্রন্টাল কর্টেক্স অংশকে বেশি মাত্রায় সক্রিয় করেছে। সুতরাং একজনের হাসির শব্দ অন্যকেও হাসতে উদ্দীপ্ত করে। আর এভাবেই একটা গোষ্ঠীর মধ্যে হাসির মাধ্যমে মানসিক বন্ধন শক্তিশালী হয়।

হাসিতে নিরাময়ঃ

হাসি দিয়ে যে শারীরিক যন্ত্রণার সাময়িক উপশম হয়, মানসিক চাপ লাঘব হয় এবং ভালো লাগার অনুভূতি তৈরি হয় তা আজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে স্বীকৃত। হাসি দিয়ে রোগযন্ত্রণা উপশমের প্রথম নজিরটি রয়েছে আমেরিকায় গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে। অ্যাঙ্কাইলোজিং স্পন্ডিলাইটিস নামে একপ্রকার তীব্র বাতের রোগে আক্রান্ত নর্মান কাজিন্স নিয়মিত দুটি কমেডি শো দেখে যন্ত্রণামুক্ত হয়েছেন। তিনি এ-ও জানিয়েছেন যে দশ মিনিট হেসে কোনও ঔষধ ছাড়াই দু’ঘন্টা যন্ত্রণামুক্ত থাকতে পেরেছেন। বর্তমানে বাত ও ক্যানসার রোগীদের জন্য হাসি দিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়েছে যা চিকিৎসা পরিভাষায় ‘Laughter Therapy’। বাচ্চা রোগীদের জন্যও অনেক হাসপাতালে চালু করা হয়েছে লাফটার থেরাপি। সেখানে ক্লাউনরা এসে বাচ্চাদের নিয়মিত মজা দেয়। কোনো হাসপাতালে আবার মজার ঘর রাখা হয়েছে। সেখানে মজুত করা আছে নানা মজার বই, কমিকস, ছবি, পোস্টার, অডিও ও ভিডিও। বাচ্চা রোগীরা সেই ঘরে গিয়ে নিয়মিত মজা নেয়। আবার কোনও হাসপাতালে রোগীর কক্ষে রাখা টিভিতে মজাদার নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে।

নির্মল হাসি আমাদের কী কী উপকার করে তা একঝলকে দেখে নেওয়া যাক –

(এক) হাসি আমাদের অনাক্রম্যতন্ত্রকে চাঙ্গা করে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। যত হাসিখুশি থাকা যায় ততই রক্তে ইমিউনোগ্লোবিউলিন G, ইমিউনোগ্লোবিউলিন A, প্রাকৃতিক ঘাতক কোশ (Natural Killer Cell), গামা ইন্টারফেরন, T-লিম্ফোসাইট ইত্যাদির পরিমাণ বেড়ে যায়। অনাক্রম্যতন্ত্রের এইসব উপাদান ভাইরাসসহ নানা ধরণের জীবাণু, এমনকি কয়েক প্রকার ক্যানসারের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে আমাদের শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।

(দুই) মানসিক চাপ আমাদের ‘স্ট্রেস হরমোন’ যেমন কর্টিসল, অ্যাড্রেনালিন, নরঅ্যাড্রেনালিন ইত্যাদি ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। এইসব হরমোন রক্তবাহকে সঙ্কুচিত করে এবং অনাক্রম্যতন্ত্রের কার্যকারিতাকে হ্রাস করে। ফলে রক্তচাপ বৃদ্ধি পায়, হৃদরোগ বা মস্তিষ্কের স্ট্রোকের ও জীবাণুঘটিত নানা রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। দিলখোলা হাসি কিন্তু এই স্ট্রেস হরমনগুলোর ক্ষরণ কমিয়ে দেয়।

(তিন) হাসিখুশি থাকলে রক্তে ডোপামিন নামক হরমোন তথা স্নায়বিক উদ্দীপনা পরিবাহকের মাত্রা কম থাকে। ডোপামিনের মাত্রা বেড়ে গেলে উদ্বেগ, মানসিক চাপ, নিদ্রাহীনতা, বাতিক, যৌনতা ইত্যাদি বেড়ে যায়।

(চার) হাসলে আমাদের অন্যতম শ্বাসপেশি মধ্যচ্ছদা (বক্ষ গহ্বর ও উদর গহ্বরের মাঝে অবস্থিত)-র কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। ফলে অতিরিক্ত বাতাস ফুসফুসে প্রবেশ করতে পারে। আর তাতে দেহের কোশে কোশে অক্সিজেনের সরবরাহ বৃদ্ধি পায়।

(পাঁচ) খিলখিলিয়ে হাসলে পেশির শৈথিল্য বৃদ্ধি পায় এবং ফুসফুস থেকে বেশি পরিমাণে বাতাস পরিত্যক্ত হয়। ফলে ফুসফুসের মধ্যে থাকা নানা জীবাণু বা ধুলিকণা বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। যারা ফুসফুসের রোগে ভুগছে তাদের জন্য খিলখিলানো হাসি দারুণ স্বাস্থ্যকর।

(ছয়) যাঁরা শারীরিক শ্রম কম করেন তাঁদের জন্য উদ্দাম হাসি খুব কার্যকর। এতে রক্ত সঞ্চালন বাড়ে এবং হৃৎপিন্ডের সক্রিয়তা বজায় থাকে।

(সাত) হাসলে শারীরিক যন্ত্রণা থেকে অনেকটাই মুক্তি ঘটে। যন্ত্রণাদায়ক চিকিৎসা বা অপারেশনের পর রোগীর যন্ত্রণা লাঘব করতে হাসির যে জুড়ি নেই তা পরীক্ষিত সত্য।

শেষ কথাঃ

মানুষ কিন্তু দিন দিন হাসতে ভুলে যাচ্ছে। মোবাইল ও ল্যাপটপ শুধু যুবসমাজকে অসামাজিক করে তোলেনি ভুলিয়ে দিচ্ছে হাসিও। বিলুপ্ত হতে বসেছে আড্ডা। ক্লাবে, চায়ের দোকানে, মাঠে, গাছতলায়, পাড়ার রকে হারাতে বসেছে বিশুদ্ধ আড্ডা। টিভি ধারাবাহিকের প্যানপ্যানানি আর যৌথ পরিবারের ভাঙনের ফলে বিলুপ্ত হতে বসেছে দৈনন্দিন পারিবারিক আড্ডা। সাথে হাসিও। এসবের পাশাপাশি বেড়েছে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সঙ্কট। বেড়েছে বেকারত্ব, অনিশ্চয়তা। আর এসবই মানুষের মুখ থেকে কেড়ে নিচ্ছে হাসি। তাই তো আজকাল মানুষকে হাসার জন্য ভর্তি হতে হয় লাফিং ক্লাবে! শরীর ও মন যদি সুস্থ থাকে তবে সব বাধা জয় করার সাহস ও শক্তি অর্জন করা যায়। বিনা ব্যয়ে শরীর ও মন সুস্থ রাখার মহৌষধ হল হাসি। তাই রামগরুড়ের ছানা হয়ে না থেকে সবাই হাসুন। খিলখিলিয়ে, কলকলিয়ে, লুটোপুটি-গড়াগড়ি খেয়ে হাসুন। হাসিতে ভরে উঠুক সংসার, সমাজ, সারা দুনিয়া।

                                                  

সূচিপত্র

কল্পবিজ্ঞান

গল্পবিজ্ঞান

বিজ্ঞান নিবন্ধ

পোড়োদের পাতা


Copyright © 2011. www.scientiphilia.com emPowered by dweb