৩০ শতাব্দীতে নেপচুনে পিকনিক

লেখক - পিনাকীশঙ্কর চৌধুরী

গোগোল চিপুস জাইগোট আর লাইব্রা হিবিষ্কোন।

বিট ও বাইট সাথে জুটে যায় যমজ দু’ভাই বোন।।

তারা সবে মিলে করেছে তৈরি জবরদস্ত ক্লাব।

আদরের নাম দিয়েছে ক্লাবের “জেট মিশাইল ল্যাব”।।

আরও মেম্বার আছে সে ক্লাবের পঞ্চাশ জন প্রায়।

মাঝে মাঝে মিলে এদেশ ওদেশ বিদেশ বেড়াতে যায়।।

বেড়াতে যাবার দেশগুলো সব শুধু পৃথিবীতে নয়।

মুন মার্কারি মার্স জুপিটারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়।।

হাজার বছর আগের কাহিনি লেখা আছে কিতাবেতে।

পৃথিবীর লোক পৃথিবীটা ছেড়ে পারত না নাকি যেতে।।

আছে সব লেখা হাজার সালের পুরাতন সংবাদে।

অনেক কষ্টে একজন নাকি পৌঁছিয়েছিল চাঁদে।।

নিল আর্মস্ট্রং নাম ছিল তার, বিংশ শতাব্দীতে।

অ্যাপোলোতে চেপে গিয়ে নেমেছিল চন্দ্রের পিঠটিতে।। 

সেই কাজটায় হয়েছিল নাকি মহা কৃতিত্ব তার।

দিয়েছিল নাকি তাকে সব লোক অনেক পুরস্কার।।

একটি হাজার বছর তো পার হয়ে গেছে তার পরে।

এখন তো সব বাচ্চারা গিয়ে চাঁদে পিকনিক করে।।

বাচ্চা বলতে বয়স বছর পঞ্চাশ ষাট হবে।

আড়াই শো সাল পার করলেই বুড়ো হবে তারা তবে।।

আগে নাকি সব ছেলে জন্মাতো মায়ের পেটের মাঝে।

এখন জন্ম দেবার জন্যে বিজ্ঞানাগার আছে।।

স্পার্ম ও ওভাম সংগ্রহ করে বিজ্ঞানাগারে রাখে।

জন্ম দেবার জন্যে সেখানে পালন করতে থাকে।।

কে যে কার মাতা কে যে কার পিতা কেউ জানতে না পারে।

সে সব গোপন তথ্য জমানো আছে কম্পিউটারে।।

আঙ্কিক মতে ছেলে মেয়েগুলো জন্মায় নিয়মিত।

এই সিস্টেমে জনসংখ্যাটা রয়েছে নিয়ন্ত্রিত।।

মানুষ এখন বাঁচে নাকো আর ভাত ডাল আটা খেয়ে।

এনার্জি তারা নিয়ে নেয় দেহে “শক্তিকেন্দ্রে” যেয়ে।।

যখনই তাদের ক্ষুধা পায় তারা “শক্তিকেন্দ্রে” যায়।

সুইচ টিপেই প্রয়োজন মতো দেহে এনার্জি পায়।।

একাজ করতে কারুরই কোনোই টাকার খরচ নাই।

বিনা খরচেই পায় সব লোক, ব্যবস্থা সেইটাই।।

ছেলেমেয়েদের যা কিছু শিক্ষা সবই কম্পিউটারে।

সুইচ টিপেই ব্রেন-এ সব জ্ঞান ঢুকে যায় একেবারে।।

তাই জ্ঞানে গুণে সবাই সমান কেউ নয় বেশি কম।

আপন আপন কাজেতে বহাল থাকে তারা হরদম।।

গোটা পৃথিবীর শাসন ক্ষমতা এক সংস্থার হাতে।

মানুষে মানুষে ঝগড়া যুদ্ধ বন্ধ হয়েছে তাতে।।

মানুষে মানুষে যোগাযোগ যত হয়ে যায় সহজেই।

বুকে ফিট করা রয়েছে যন্ত্র কাজ হয় সেটাতেই।।  

যে যেথাই থাক ইচ্ছা হলেই অন্য দেশের ছবি।

মুহূর্ত মাঝে মোবাইল স্ক্রীনে ফুটিয়ে তুলবে সবই।।

গোগোল চিপুস আছে নর্থ পোলে, লাইব্রা ইণ্ডিয়ায়।

বিট ও বাইট অষ্ট্রেলিয়ায় জাইগোট রাশিয়ায়।।

হিবিস্কোন সে চিলিতে রয়েছে মিটিং করল সবে।

এবার একটা জবরদস্ত পিকনিক করা হবে।।

কোথায় এবার পিকনিক হবে আলোচনা তাই নিয়ে।

শেষে ঠিক হল পিকনিক হবে নেপচুন গ্রহে গিয়ে।।

 দ্রুতগতি যান হবে দরকার দূরের গ্রহেতে যেতে।

রকেটেতে নয় যেতে হবে সেথা “এনার্জি বাব্‌ল্‌”-এতে।।

“এনার্জি বাব্‌ল্‌” এমন সে যান গতিটা আলোর প্রায়।

ছেলে মেয়েগুলো নেপচুনে যেতে চড়ে বসে সেইটায়।।

আহা অপরূপ পিকনিক পার্টি তিরিশ শতাব্দীতে।

সেই দৃশ্যের দেখা পাবে তুমি মনের চক্ষুটিতে।।

 

ওদিকে কবরে পাশ ফিরে শোয় নিউটন গ্যালিলিও।

মনে মনে তারা বলে – “বিজ্ঞান যুগ যুগ তুমি জিও”।।  

সূচিপত্র

কল্পবিজ্ঞান

গল্পবিজ্ঞান

বিজ্ঞান নিবন্ধ

পোড়োদের পাতা


Copyright © 2011. www.scientiphilia.com emPowered by dweb