গেল্টু আর বিমু কাকুর প্লাষ্টিক্স জ্ঞানাঞ্জন

লেখক - গৌতম মুখোপাধ্যায়

                       

সৌমশুভ্র, কি সুন্দর নাম দিয়েছিল দাদু। তাকে কিনা বাড়ির সবাই করে দিলে গেল্টু! কি, না সে নাকি ছোট যখন ছিল তখন গুলতিকে গেল্টু বলে ফেলেছিল। এমন ভুল কি মনে রাখে লোকে। অবশ্য গেল্টু নিজের বাড়ির বড়দের বড় একটা সম্মান দিতে চায় না লোক বলে। সে এখন বড় হয়েছে, মানে বারোতে পড়েছে, ক্লাস সেভেন হল। তার মতে লোক হলেন স্কুলের দু তিনজন মাষ্টার মশাই, যাঁরা ওকে ক্লাসে নানা দায়িত্ব দিয়ে সম্মান দেখান। আর, বিমু কাকু, বিমলাবহ সেন। কি লোক, জ্ঞানসাগর। বাবার ছোটবেলার বন্ধু। নিজের ছেলে মেয়ে নেই। তাই কাকীমা আর কাকু শুভ্রকে চোখে হারায়। দেখ তো তার ডাক নামটাও কি সুন্দর দিয়েছে কাকু আর কাকীমা। ওর দিনের অনেক সময় কাটে ওই বাড়িতেই, কত বই, কত গান আর সিনেমার সংগ্রহ। ছুটিতে বেড়াতে গেলে সব সময়ে সঙ্গে শুভ্র।

আজ ছিল গেল্টুর স্কুলে পরিবেশ সংরক্ষণ দিবস। ছাত্ররা সব নানা প্ল্যাকার্ড তৈরী করেছে, প্রভাতফেরীর জন্যে। কেউ কাঁধে নিয়েছে কেমন করে পরিবেষ দূষণ আমাদের জীবন অসহনীয় করছে তার কথা আবার কেউ নিয়েছে এই দূষণে জন্যে দায়ী ভিলেন কে বা কারা। গেল্টু নিয়ে চলেছে মায়ের সাহায্য নিয়ে তৈরী প্ল্যাকার্ড, প্লাষ্টিক্সের গুষ্টির তুষ্টি করে তাদের বর্জন করার ডাক। ম্যাডাম সেই রকমই বলে দিয়েছিলেন। পথে দেখা বিমু কাকু। অফিস যাচ্ছে। ভুরু কুঁচকে বিরক্ত চোখে দেখল গেল্টুর প্ল্যাকার্ড, তারপর কড়া চোখে বলল সন্ধ্যেবেলা আসবি আমার বাড়ি। গেল্টু অবাক। কাকু তো কোনদিন গেল্টুর কোন কাজে বিরক্ত হয় না, রাগ তো দূরের কথা।

স্কুলে আর মন বসল না আজ। ব্রেকেও ঠিকমত খেলার ইচ্ছে হল না। বন্ধুদের সঙ্গে গল্পও দায়সারা। মাথায় ঘুরছে বিমু কাকু বিরক্ত কেন, কি বলবে সন্ধ্যেবেলায়। বাড়ি ফিরে খাওয়াটাও ঠিক জমল না। ঠামার রান্না করা ওর প্রিয় শুক্তো আর হিং দিয়ে রুই কালিয়া মুখে রুচল না। খেলতে যেতেও ইচ্ছে হল না বিকেলে। ঠামা আর মা’র বারেবারে প্রশ্ন ‘কি হয়েছে’ বিরক্ত করল গেল্টুকেই। সন্ধ্যের অপেক্ষা টেনশন বাড়িয়ে দেয়। কি জানি কেন বিরক্ত বিমু কাকু।

তর সইল না, সন্ধ্যে নামার আগেই হাজির বিমু কাকুর বাড়ি। কাকু তখনও ফেরে নি। কাকীমা বলল,  ‘এসে গেছিস, একটু বোস। তোর জন্যে আজ হিং কচুরী, আলুর দম আর চাটনী করেছি। তোর কাকু ফোন করে বলেছিল তুই আসবি।“ গেল্টু থুড়ি শুভ্র মাথা নেড়ে বলল “ কাকীমা, কাকু এলে খাব। কাকু কেন রাগ করেছে আমার ওপর জান?” কাকীমা বললে সে কি রে? কাকু তোর ওপর রাগ করবে কেন? ফোনে তো তোর জন্যে কচুরী করতে বলল।“ এর মধ্যেই কাকু এসে হাজির। বগলে এক চার্ট পেপারের রোল আর একটা প্যাকেটে আঁকার রঙ তুলি। একটু বসতে বলে কাকু গেল চান করতে। তাজা হয়ে বেরিয়ে বলল, “ চল তোর বাড়িতে বলে আসি তুই আজ আমাদের কাছে থাকবি আর কাল আমাদের বাড়ি থেকেই স্কুল যাবি। স্কুলের ব্যাগ আর ইউনিফর্মও তো আনতে হবে।“ গেল্টুর তাতে আপত্তি নেই, কিন্তু কাকু কেন এখনও বলছে না কি জন্যে ডেকেছে আর রাতে থাকতেই বা হবে কেন।

যাই হোক, বাড়িতে খবর দিয়ে ফিরে কাকু কাকীমাকে বলল, “দাও আমাদের খেতে”। এ হল আর এক মুশ্কিল। তার মানে খাওয়া শেষ না হলে কাকু কথা বলবে না। খাবার সময় নাকি কথা বলতে নেই, তাতে বিষম লাগার ভয় থাকে। কাকু আবার খাবার মধ্যে জলও খায় না। জল খাবে খেয়ে ওঠার অন্তত আধ ঘন্টা পরে। তাতে নাকি হজম ঠিক হয়। কে জানে! গেল্টুর তো গ্রাসে গ্রাসে জল লাগে। খাওয়া তো শেষ হল। গেল্টু কিন্তু অমন কচুরী আর আলুরদম আজ ঠিক করে তারিয়ে খেতে পারল না। কাকু যে কি  উদ্বেগ বাড়িয়ে দিয়ে মজা পায়!

বিমু কাকু খেল আস্তে সুস্তে, প্রত্যেক গ্রাস উপভোগ করে। তারপর জিজ্ঞেস করল কে বলেছে যে প্লাষ্টিক্সের এত দোষ আর পরিবেশ ধংসকারী। গেল্টু ভাবল, বারে! বেশ তো। এই সেদিন, বড়দিনের ছুটিতে পুরী বেড়াতে গিয়ে বীচে হাঁটতে হাঁটতে কি বলেছিলে ভুলে গেলে! বলেই ফেলল, তুমি যে বলেছিলে প্লাষ্টিক্স সমুদ্রে জমছে লক্ষ লক্ষ টন আর তা ক্ষতি করছে সামুদ্রিক জীবনের। তাছাড়া হাল্কা হওয়ায় প্লাষ্টিক্স জলের ওপর ভেসে বাষ্পায়নকে ব্যহত করে আবহাওয়ার পরিবর্তন আরো দ্রুত করতে পারে। কাকু বললে, হ্যাঁ বলেছিলুম। কিন্তু সঙ্গে আরো বলেছিলুম যে এ জন্যে দায়ী আমরাই। আসলে কোন নিষ্প্রাণ জিনিষ নিজে থেকে কারো কোন ক্ষতি করতে পারে না। মানুষ তাদের সম্বন্ধে কতটা জানে আর কি ভাবে ব্যবহার করছে তার ওপর নির্ভর করে তারা ক্ষতি করছে না ভাল করছে। তামা আর লোহার গুণ আমরা জেনেছি কয়েক হাজার বছর ধরে। তাই এদের আমরা এদিক ওদিক পড়ে থাকতে দেখি না। একবার প্রয়োজন ফুরোলে আবার অন্য কাজে তাদের লাগাতে শিখেছি। তামা, লোহা ছাড়া যেমন আমাদের সভ্যতা গড়ে উঠতে পারত না, সে রকমই এত মানুষ জীবন হারাত না অন্য মানুষের হাতে। সব জিনিষই ভাল আর খারাপ কাজে ব্যবহার করা যায়। শুধু জানতে হয় তাদের ভাল করে। রাস্তায় পড়ে থাকা ব্লেডের টুকরোয় পা কাটলে আমরা কি লোহাকে দোষ দি না মানুষকে, যে রাস্তায় ওই ব্লেডের টুকরো ফেলেছে!

তুই দেখিস নি, বিমু কাকু বলে চলে। আমারাও দেখি নি। কিন্তু তোর দাদু ঠামারা দেখেছে, দুধের গাড়ি থেকে নামত কাঁচের বোতলে দুধ। দুধের চেয়ে বোধহয় বোতল ভারী। ভাব তো  ব্যাপারখানা। দুধ আসছে হাজার লিটার, মানে প্রায় হাজার কেজি, আর গাড়ি ওজন বইছে এক হাজার তিনশ কেজির মত। তারপর আবার গাড়ি ফিরছে তিনশ কেজি বোতল বয়ে নিয়ে, ঝনর ঝন শব্দ দূষন করে। কত ডিজেল খরচ হচ্ছে বিনা কারণে। তার ওপর বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে অতিরিক্ত কার্বন ডাই অক্সাইড, নাইট্রোজেন অক্সাইডের মত গ্যাস। আর এখন, দুধ আসে পলি এথিলীন পাউচে। এক লিটার দুধের পাউচের ওজন বিশ গ্রামের কম। তাকে আবার ডেয়ারিতে ফিরিয়ে নিয়ে যাবার ঝামেলাও নেই। কত ডিজেল কম পুড়ল? কত কম গ্রীন হাউস আর বিষাক্ত গ্যাস তৈরী হল? পরিবেশ কিছু রেহাই পেল কিনা? এর ওপর কাঁচের বোতল তৈরীর জন্যে প্রয়োজনীয় জ্বালানী লাগল না, সেই সঙ্গে কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরী হল না।

এখন একটা সমস্যা হল এই খালি পাউচ গুলো। শুধু দুধের নয়। এরকম কত প্লাষ্টিক্স প্যাকেট আর ব্যাগ আসে বাড়িতে নানা কাজে, নানা সময়ে। তারা ভীষণ হাল্কা আর অনেক সময়েই আলাদা করে তাদের দাম আমরা দিই নি বলে আমরা তার মূল্যও বুঝি না। ফেলে ছড়িয়ে চারদিক নোংরা করি, যার থেকে আসে হাজার পরিবেশ সমস্যা। আসলে কি প্লাষ্টিক্স এত সস্তা? কেজি হিসেবে পলি এথিলীন গড়ে প্রায় আশি টাকা। খুব সস্তা কি? কিন্তু যেহেতু এর ঘনত্ব কম আর খুব পাতলা ফিল্ম অবস্থাতেও অভঙ্গুর, তাই অল্প পলি এথিলীন ব্যবহারেই কাজ হয়ে যায়। যেখানে একটা কাঁচের বোতলের দাম একশ দেড়শ টাকা, একটা পাউচের দাম পড়ে দু টাকার কিছু বেশি। কিন্তু যদি প্রতিদিন এক লিটার দুধ কিনি, মাসের শেষে আমরা অন্তত সত্তর পঁচাত্তর টাকা খরচ করেছি ওই পাউচের পেছনে যার মধ্যে পলি এথিলীন পঞ্চাশ টাকার কাছে, যা দুধের দামেই ধরে দিয়েছি। আমরা সেই পাউচ ছড়িয়ে ছিটিয়ে দাম দিয়ে প্রদুষণ বাড়াচ্ছি, এমন বোকা আমরা।

গেল্টু বললে, আমাদের কেউ কেন জানায় না এ কথা। কাকু বললেন, এ কথাটা জানানোর দায়িত্ব বড় বড় প্লাষ্টিক্স তৈরীর কোম্পানী গুলোর। প্লাষ্টিক্সের ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে গত ষাট সত্তর বছর ধরে। যথষ্ট সময় পাওয়া যায় নি এর সমস্যা আর সুযোগ বুঝে ওঠার। তাছাড়া কোম্পানীগুলো একবার ব্যবহার হয়ে যাওয়া প্লাষ্টিক্সকে আবার ব্যবহার করায় দেখেছে ব্যবসায়িক সুযোগের অপচয়। তবে এখন পরিবেশ সমস্যা প্রকট হওয়ায় বেশ কিছু কাজ হচ্ছে ব্যবহৃত প্লাষ্টিক্সের সুযোগ কাজে লাগানোর। কিন্তু প্লাষ্টিক্স তো এক রকম নয়। তার অজস্র রূপ আর ব্যবহার। সবাই সবার থেকে আলাদা। তাছাড়া দরকার বড় বড় কোম্পানী গুলোর বিনিয়োগ এই ব্যাপারে গবেষণায়।

গেল্টু জানত প্লাষ্টিক প্লাস্টিকই। কাকু বলছে তার অনেক রকমফের। জিজ্ঞেস করে আরো দু একটা প্লাস্টিকের নাম, তাদের ব্যবহার আর তারা কি করে পরিবেশ বাঁচাতে সাহায্য করছে। বিমু কাকু বলে যেমন ধর গাড়ির হেড ল্যাম্প লেন্স। আগে কাঁচ ব্যবহার হত, এখন হয় পলিকার্বনেট। ওজন তো কমেইছে, সঙ্গে ভাঙার ভয় নেই। তারপর গাড়ির বাম্পার। সেও আগে হত ষ্টীলের, এখন পলি প্রপিলীনের। এইভাবে আজকাল গাড়ির মডেলের ওপর নির্ভর করে ৩০ থেকে ১২০ কেজি প্লাষ্টিক্স ব্যবহার হয়, যা গাড়ির ওজন কমিয়েছে অনেক আর কমিয়েছে পেট্রলের প্রয়োজন। এর ওপর প্লাষ্টিক্সের জিনিষ তৈরী করতে লাগে অনেক কম শক্তি যা কমায় প্রদূষণ। একি কাহিনী PET বোতল পানীয় জলের। ভেবে দেখ কত বোতল ভাঙত আর লোকের হাত পা কাটত কাঁচের বোতলে পানীয় জল বিক্রী হলে। জ্বালানীর খরচ আর তার প্রদূষণ তো আলাদা। তারপর ধর টেলিভিশন। পুরোণো দিনে ব্যবহার হত কাঠ, আর আজ ব্যবহার হয় অগ্নি নিরোধক পলি ষ্টাইরিন বা এবিএস প্লাষ্টিক। চিন্তা করে দেখ কত গাছ কাটতে হত আজকের লক্ষ কোটি টেলিভিশন তৈরীতে, প্লাষ্টিক্স না থাকলে। আর প্লাষ্টিক্স যেভাবে নানা নিত্য ব্যবহারের জিনিষের উৎপাদকতা বাড়িয়েছে তা সম্ভব হত না তারা না থাকলে। দামও আসত না সাধারণ মানুষের নাগালে। এ রকম আছে আরো অনেক প্লাষ্টিক্স আর তাদের ব্যবহার আমাদের রোজকার জীবন সহজ ও সুরক্ষিত করতে, পরিবেশ বাঁচিয়ে। বুঝতে পারছিস তো আমি কেন বলেছি প্লাষ্টিক্স বর্জন নয় আমাদের প্লাষ্টিক্সের জিনিষ যেখানে সেখানে ফেলার অভ্যেস বর্জন করতে হবে।

গেল্টু গভীর চিন্তায় কাটাল কিছু সময়। তারপর বলল, কিন্তু কাকু আমি যে আজ প্ল্যকার্ড নিয়ে সবাইকে বললুম প্লাষ্টিক্স না ব্যবহার করতে, তা ফেরাব কি করে! আর সব ভালর পরেও প্লাষ্টিকের কারণে এক অন্য প্রদূষণও তো বাড়ছে। কাকুর উত্তর তৈরী। বললে সেই জন্যেই তো চার্ট পেপার এনেছি। আমরা সবাই মিলে পোষ্টার লিখব আগামী দু তিন দিন। তোর বাবা আর মাকেও ডাকব পোষ্টার লিখতে রোজ সন্ধ্যের পর। আজ কথা বলেমছি তোদের প্রিন্সিপাল ম্যাডামের সঙ্গে। শুক্রবার  এই সব পোষ্টার নিয়ে তোদের স্কুলে হবে এক প্রদর্শনী। ম্যাডাম ব্রেকের পর ক্লাস বন্ধ রাখতে রাজি হয়েছেন। সব অভিভাবকদের আসতেও বলবেন ওই দিন স্কুলে। আমরাও সবাই যাব তোকে উৎসাহ দিতে।

আর প্লাষ্টিক্স প্রদূষণের কথা যে তুললি তাও থাকবে আমাদের পোষ্টারে। কাজ দেরীতে হলেও শুরু হয়েছে। তবে অনেক কাজ বাকি। যেমন কেমন করে বাড়ি বাড়ি থেকে প্লাষ্টিকের নানা জিনিষ পরিষ্কার অবস্থায় পরিছন্ন ভাবে সহজে নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছে দেওয়া যায় আবার অন্য ব্যবহারের উপযুক্ত করতে। কিছু কাজ যা সফল ভাবে কিছুটা হলেও হচ্ছে তা হল জলের বোতল থেকে পলি এষ্টার ফাইবার, রাস্তা তৈরীতে ব্যাগ পাউচ ইত্যাদি বা একটু নিকৃষ্ট ধরনের ময়লা ফেলার ব্যাগ ইত্যাদি। কিন্তু সমস্যা হল কয়েকবার নানা ব্যবহারের পরে প্লাষ্টিক্সের শক্তি যাবে কমে। তখন? সে কাজের জন্যে চাই বড় ও জটিল গবেষণা। যা করতে হবে বড় সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় আর সরকারী গবেষণাগারে। উদ্দেশ্য কি করে আবার প্লাষ্টিক্স তৈরী মূল উপাদান, যাকে মনোমার বলে তা ফিরে পাওয়া যায়  কম শক্তি খরচ করে। তাছাড়া অন্য যে সব রাসায়নিক যোগ করা হয় প্লাষ্টিক্সকে নানা ব্যবহারের উপযুক্ত করতে তাদেরও যতটা সম্ভব ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কাজ কিছু শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই, নানা ব্যাকটেরিয়া আর এনজাইম নিয়ে। যা প্লাষ্টিক্সের মূল উপাদান ফিরে পেতে সাহায্য করতে পারে। একটা কাজ এখনই মনে পড়ছে। জার্মানীর কয়েকজন বিজ্ঞানী ব্যবহার হয়ে যাওয়া পলি এথিলীন চূনাপাথরের গুঁড়োর সঙ্গে মিশিয়ে গবেষণাগারে তৈরী করেছেন কার্বাইড অনেক কম শক্তি খরচ করে। আর কার্বাইডে জল মেশালে তৈরী হয় অ্যাসিটিলীন গ্যাস, যা হতে পারে নানা প্লাষ্টিকের শুরুর উপাদান।

তিন দিন ধরে হৈহৈ করে তৈরী হল সব পোষ্টার। সেই সঙ্গে মা আর কাকীমার রান্না দারুণ সব খাবার। এসে গেল সেই শুক্রবার। সারা স্কুলে খুব উত্তেজনা। সৌমশুভ্র কি না কি দেখাবে পোষ্টার প্রদর্শনীতে। সব শিক্ষক, শিক্ষয়ত্রী, উপস্থিত অভিভাবক আর ছাত্ররা প্রভাবিত ভীষণ ভাবে। এ সব কথা তো জানাই ছিল না। মিছেমিছিই সবাই প্লাষ্টিক্সকে ভিলেন বানিয়েছে। গেল্টু এখন স্কুলের হিরো। উঁচু ক্লাসের দাদা দিদিরাও ওকে একটু সম্ভ্রমের চোখে দেখছে। প্রিন্সিপাল ম্যাডাম সে দিনই  বলেছেন যে  সব স্কুলের প্রিন্সিপালদের অনুরোধ করবেন তাঁদের স্কুলেও এই প্রদর্শনী করার। আরো ঘোষণা করেছেন সৌম্যশুভ্র পাবে দুটো অতিরিক্ত স্টার এই প্রদর্শনীর জন্যে।

                                                  

সূচিপত্র

কল্পবিজ্ঞান

গল্পবিজ্ঞান

বিজ্ঞান নিবন্ধ

পোড়োদের পাতা


Copyright © 2011. www.scientiphilia.com emPowered by dweb